সিলেট ২৮শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৪:৪৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
সিলেট স্টারঃসিলেটে হত্যা মামলার আসামিদের বাড়ি থেকে প্রায় কোটি টাকার সম্পদ লুটপাটের দাবি করেছেন পরিবারের সদস্যরা।শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি চ্যানেলের লাইভে এসে এমন দাবি করেছেন সিলেট সদর উপজেলার খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত রহমান আলী পাখী মিয়ার স্ত্রী আলেখা বেগম ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
লাইভে তারা বলেন, গত ১৫ জুন তাদের প্রতিবেশী মদরিছ আলী ওরফে ফকির ও তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে সামান্য ঝগড়া হয় আলেখা বেগমের ছেলেদের। এরপর ফকির মিয়াকে হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
তিনি জানান, তখন ফকিরের ছেলে-মেয়ে ও পরিবারের সদস্যবৃন্দ আলেখা বেগমের ছেলেদের বিরুদ্ধে ফকির মিয়াকে হত্যার কথা ছড়িয়ে দেন। তখন তাদের বাড়িতে এয়ারপোর্ট থানার সাহেববাজার ফাঁড়ির পুলিশ আসে এবং আলেখা, তার মেয়ে ও দুই পূত্রবধূকে নিরাপত্তার কথা বলে থানায় নিয়ে যেতে চাইলে তারা বাড়িতে থাকা সম্পদ হেফাজতের কথা বলেন। এসময় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা এয়ারপোর্ট থানার সাহেববাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই সুলেমানের কাছে ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন। সুলেমান তৎক্ষনাত চাবিটি ইউপি সদস্য ও সিলেট সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য আনসার আলীর হাতে তুলে দেন।
আলেখার মেয়ের স্বামী আব্দুল হাকিম লাইভে বলেন, সেদিন সন্ধ্যায় আমাকে ডেকে আনেন ইউপি সদস্য আনসার আলী। তিনি আমার কাছে ঘরের চাবি দেয়ার পরপরই মদরিছ আলী ফকিরের ভাতিজা, সোনাফর আলীর ছেলে মঞ্জুর, নজরুল ও ফখরুল, মসদ আলীর ছেলে ইসমাইল ও ইছন, মদরিছ আলী ফকিরের ছেলে মজিবর ও আতাবুর, আব্দুল করিমের ছেলে আবুল ও বাবুল, আবুলের ছেলে মাহিন, আলমের ছেলে মক্তার, সোনাফর আলীর মেয়ে রাবেয়া ও ইছনের স্ত্রী রেবেকাসহ তাদের আরও অনেক আত্মীয় স্বজন বাড়িতে প্রবেশ করে আমাকে মারধোর করেন। ইউপি সদস্য আনসারের সামনেই তারা আমাকে রক্তাক্ত করার পর বাড়ির গরু ছাগল হাস-মোরগ কাঠ রড কয়েল ইত্যাদি লুটপাট করে নিয়ে যায়। তিনি বলেন, আমার পায়ে জখম হওয়ায় চিকিৎসার জন্য মেম্বারের কাছে চাবি দিয়ে চলে যাই।
এরপর তারা দীর্ঘদিন নিরাপত্তা হেফাজতে ছিলেন বলে জানান আলেখা বেগম। কয়েকদিন আগে ছাড়া পেয়ে তারা বাড়িতে ফিরে এলে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) তাদের বাড়ির চাবি ফিরিয়ে দেন সাবেক ইউপি সদস্য ইলাছ আলী। তার কাছে পুলিশের মাধ্যমে আনসার মেম্বার চাবি হস্তান্তর করেছেন।
আলেখা ও তার সন্তানরা দাবি করেন, তাদের বাড়ি থেকে নগদ ১৫ লক্ষাধিক টাকা, ৪ টন রড, ৪০ বস্তা সিমেন্ট, ৩০ কেজি কয়েল, ৬টি বড় আকারের গরু, ৪ ভরি স্বর্ণের চেইন, ৩ জোড়া স্বর্ণের কানের দোল, প্রায় দু’শো মন জ্বালানি কাঠ, খাট, পালং, ড্রেসিং টেবিল, ক্যাবিনেট, চেয়ার টেবিলসহ ঘরের যাবতীয় আসবাবপত্র, পোশাকসহ এমনকি ডেক-ডেকচি এবং নিজেদের মোদি দোকান পর্যন্ত লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ঘরে ফিরে তারা আর কিছুই পান নি।
শনিবার সরজমিনে ওই বাড়িতে গেলেও দেখা গেছে, ঘরগুলো ফাঁকা, লুটপাটের চিহ্ন স্পষ্ট। শুধু ঘর লুটপাটই নয়, তাদের পুকুরের মাছ, জমির ধান এবং খেতের কচুর মুখীও তুলে নিয়েছে বলে দাবি করেছেন তারা। সবমিলিয়ে তাদের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকার সম্পদ লুটপাট হয়েছে বলে দাবি আলেখা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যদের।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সাহেববাজার পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই সুলেমান বলেন, ওদের বাড়িতে লুটপাটের আলামত দেখা গেছে। তারা অভিযোগ দিলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আলেখা বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা বারবার ইউপি সদস্য আনসার আলীর দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছেন। মূলতঃ তার নির্দেশেই লুটপাট হয়েছে বলেও তারা বারবার দাবি করেছেন।
এ প্রসঙ্গে আনসার আলী বলেন, আমার সামনে কোনো লুটপাট হয়নি। হুকুম দেয়ার প্রশ্নই উঠেনা। আমি আমার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তাদের বাড়ি হেফাজতের চেষ্টা করেছি। তবে শুনেছি, গত ৪ ও ৫ আগস্ট রাজনৈতিক অস্থিরতার সুযোগে তাদের বাড়িতে কে বা কারা হামলা করে কিছু মালামাল নিয়েছে। এর বেশী কিছু জানিনা। আমি অসুস্থ থাকায় এ ব্যাপারে আর তেমন খোঁজ-খবর নিতে পারিনি।
লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে যাদের বিরুদ্ধে তাদের পক্ষ থেকে মসদ আলীর ছেলে ইসমাইল বলেন, আমি বা আমরা লুটপাটের সঙ্গে জড়িত নয়। কে বা কারা এটা করেছে জানিনা। আমাদের চাচাকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা শোকে মুহ্যমান অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। আমাদের হেয়প্রতিপন্ন করতেই এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
সিলেট স্টার নিউজ
সত্যের পথে আপোষহীন ও নিরপেক্ষ অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল
——————————————————–
উপদেষ্টা মন্ডলী সভাপতি
……………………………
——————————————————
ঠিকানাঃ
মোবাইল: 01795396925
ইমেইল: sylhetstar.news@gmail.com
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ রুহিন আহমদ।
সিলেট স্টার নিউজ একটি স্বতন্ত্র অনলাইন ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল।
আমাদের কোন দৈনিক প্রিন্ট ভার্সন নাই।
———————————————————-