এটিএম বুথে মিলছে না টাকা, বিপাকে গ্রাহক

প্রকাশিত: ৮:৩২ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১২, ২০২৪

এটিএম বুথে মিলছে না টাকা, বিপাকে গ্রাহক

সিলেট স্টারঃ রাজধানীর বেশির ভাগ এটিএম বুথে টাকা মিলছে না। ফলে বর্তমানে বেশির ভাগ বুথ কার্যত অচল। আবার অনেক বুথে মেশিন সচল থাকলেও প্রত্যাশিত পরিমাণ অর্থ মিলছে না। এমন পরিস্থিতিতে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীবাসী।

গেল সপ্তাহ থেকে এটিএমসেবায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। ব্যাংকাররা বলছেন, দ্রুতই এই সংকট কেটে যাবে। গ্রাহকরা আগের মতো সেবা পাবেন। কয়েক দিন ধরে নিরাপত্তার আশঙ্কায় এটিএম বুথে টাকা পাঠানো যাচ্ছে না বলে এই সংকট তৈরি হয়েছে।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে ইসলামী ব্যাংকের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গোলাগুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মতিঝিল দিলকুশা এলাকায়। এতে ওই এলাকার অনেক ব্যাংকের শাখা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় এটিএম বুথও। এতে এটিএম বুথগুলোতে ভোগান্তিতে পড়েন অনেক গ্রাহক।কারণ গতকালও এক ব্যাংকের কার্ড দিয়ে অন্য ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা ওঠানো যায়নি।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে এটিএম বুথে টাকা পৌঁছে দেয়। দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তৃতীয় পক্ষের এই সেবা বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। এ কারণে এটিএম বুথে টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। দেশজুড়ে বেশির ভাগ ব্যাংকের এটিএমসেবা একরকম বন্ধ রয়েছে।নিরাপত্তার আশঙ্কায় ব্যাংকগুলো তাদের এটিএমসেবা কমিয়ে দিয়েছে।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, গত মে মাস শেষে দেশে বিভিন্ন ব্যাংকের মোট এটিএম বুথের সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৪২৮। এর মধ্যে শহরাঞ্চলে ৯ হাজার ৪০৯টি আর গ্রামাঞ্চলে চার হাজার ১৯টি। এটিএম ছাড়া সিআরএমের (ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন) মাধ্যমেও নগদ টাকা উত্তোলন করা যায়। দেশের বেসরকারি খাতের ব্র্যাক, সিটি, ঢাকা ব্যাংকসহ অনেক ব্যাংক বর্তমানে এটিএমের পরিবর্তে সিআরএমের প্রতি ঝুঁকছে। সিআরএমে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি নগদ জমারও সুযোগ রয়েছে। গত মে মাস শেষে দেশে সিআরএমের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৪৫০টি। এসব সিআরএমের বেশির ভাগ শহরাঞ্চলে, তিন হাজার ৯৮৫টি।

ব্যাংক থেকে দুই লাখ টাকার বেশি তোলা যাচ্ছে না

নিরাপত্তার কারণে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এক হিসাব থেকে দুই লাখের বেশি নগদ টাকা উত্তোলন করা যাবে না। এই সিদ্ধান্ত গতকাল রবিবার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে, যা চলবে পুরো সপ্তাহ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, নিরাপত্তার কারণে শাখায় শাখায় টাকা স্থানান্তর করতে সমস্যা হচ্ছে। এ জন্য এক হিসাব থেকে দুই লাখ টাকার বেশি উত্তোলন করা যাবে না। চেকের মাধ্যমে লেনদেন তদারকি জোরদার করতে হবে এবং সন্দেহজনক লেনদেন বন্ধ করতে হবে। তবে একজন গ্রাহক নগদ টাকা উত্তোলন করতে না পারলেও যেকোনো পরিমাণ নগদ টাকা স্থানান্তর ও ডিজিটাল লেনদেন করতে পারবেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবারও নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনের সীমা আরোপ করা হয়েছিল। সেদিন এক হিসাব থেকে নগদ এক লাখ টাকা উত্তোলনের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।

বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম কালের কণ্ঠকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শনিবারের নির্দেশনায় খুব সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলাম আমরা। কারণ মাত্র দুই লাখ টাকা দিয়ে তো একটি কম্পানির বেতন দেওয়া যায় না। তাই আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেতনের টাকা দেওয়ার জন্য দুই লাখ টাকার বেশি উত্তোলনের অনুমতি নিয়েছি। ব্যাংক থেকে টাকা তুলে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান জুলাই মাসের বেতন দিতে সক্ষম হয়েছে। তবে পুরো সমস্যা এখনো সমাধান হয়নি।