লুটতরাজে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে

প্রকাশিত: ১০:১৬ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৮, ২০২৪

লুটতরাজে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে

সিলেট স্টারঃদেশে উদ্ভূত পরিস্থিতির সুযোগে লুটতরাজ ও ধ্বংসাত্মক কাজে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হচ্ছে। আমার ধারণা, তিন-চার দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। যারা এসব অপরাধ করেছে, তাদের আমরা ছাড় দেব না।

 

অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী প্রধানসহ আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।’ গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীতে সেনা সদর দপ্তরে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাপ্রধান এসব কথা বলেন।

রাজধানীসহ সারা দেশে বিভিন্ন স্থাপনার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার এবং রাস্তাঘাটে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণসহ জনসাধারণের জন্য শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকরা যে ভূমিকা রাখছে, তা অব্যাহত রাখার অনুরোধ জানিয়ে জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘ছাত্ররা আমাদের সাহায্য করছে।

রাজধানীসহ গ্রামগঞ্জে ছাত্ররা কাজ করছে। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ 

এ সময় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে শিক্ষার্থী ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাজের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু ট্রাফিক পুলিশ ছিল না, তারা ট্রাফিকের কাজ করছে। এ ছাড়া রাস্তা এবং ভাঙচুর করা বিভিন্ন স্থাপনা পরিষ্কার করছে।

আমি অত্যন্ত আনন্দিত, তারা এই ভালো কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। আমি তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন এই ভালো কাজগুলো চালিয়ে যায়। একই সঙ্গে পুলিশ সক্রিয় হলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে যেসব জায়গায় লুটতরাজ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে, এগুলো প্রতিহত করার জন্য আমি তাদের অনুরোধ করেছিলাম। তারা সে কাজও করছে।আমি নিশ্চিত, আমরা সবাই মিলে একটা সুন্দর পরিস্থিতিতে ফেরত আসতে পারব।’

 

জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, ‘অনেক ধরনের গুজব চলছে। আমি জনগণকে আহ্বান করব, দয়া করে এ ধরনের গুজবে যেন কান না দেয়। আমরা সবাই মিলে সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা-লুটতরাজের মতো ঘটনার বিষয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমি দায়িত্ব নিয়েছিলাম অবশ্যই। প্রথমে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে বলেছিলাম সাহায্য করেন। এই মুহূর্তে কিছু সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। উনারাও বলেছিলেন, যতটুকু পারেন সহযোগিতা করবেন। তার পরও কিছু ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পেছনে কিছু কারণও আছে। এখন পরিস্থিতি কিন্তু শান্ত হয়ে আসছে।’

তিনি বলেন, ‘এখন পুলিশ কিন্তু কোনো ডিউটিতে নেই। পুলিশ একটি বড় ফোর্স। এই ফোর্সের অনুপস্থিতিতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে, সেটা সেনাবাহিনী দিয়ে পূরণ করা সম্ভব নয়। তার পরও আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। হাজার হাজার লোককে আমরা কিন্তু এসব সমস্যা থেকে উদ্ধার করেছি।

আমার জানা মতে, বহু থানার পুলিশ অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে উদ্ধারে কাজ করেছি। বিমানবন্দর,  কূটনৈতিক জোনসহ এসব গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টার পরও দেশের কিছু জায়গায় দু-এক দিন কিছু ঘটনা ঘটেছে। তবে আমি নিশ্চিত, যখন পুলিশে পুনর্গঠন হয়ে যাবে, তারা যখন তাদের কাজে নেমে যাবে, তখন এই বিষয়গুলো পূরণ করতে পারব।’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘খুব শিগরিই তারা পুনর্গঠিত হবে। পুলিশ প্রধান হিসেবে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত, পুলিশ সদস্যদের মনোবল আবার ফিরে আসবে। আবার পুলিশ প্রফেশনাল ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের নিশ্চিত করতে চাচ্ছি, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী সর্বদা জনগণের সঙ্গে আছে এবং থাকবে। এবং আমরা সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে যাব এবং দেশে সুন্দর একটা পরিবেশ  সৃষ্টি করতে পারব।