সিলেট নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা

প্রকাশিত: ৬:০৭ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২২

সিলেট নগরজুড়ে জলাবদ্ধতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘূর্ণিঝড় অশনি’র প্রভাবে সিলেটে টানা বৃষ্টিতে নগরীজুড়ে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। কোথায় টাখনু সমান পানি, কোথাও হাঁটু সমান পানি। বুধবার ও বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সিলেট নগরীতে এই অবস্থা। বিভিন্ন পাড়া–মহল্লার বাসাবাড়িতে পানি প্রবেশের করেছে বলে জানা গেছে। এ অবস্থায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও থমকে পড়েছে। ফলে জলাবদ্ধতা চরম আকার ধারণ করেছে। এতে নগরবাসীকে মারাত্মক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
সিলেট আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃষ্টির হার কমে আসবে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরও ২১ মে পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
নগরীর বঙ্গবীর রোড, হাওয়া পাড়া, শিবগঞ্জ, সোনাপাড়া, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, কাজলশাহ, লালাদীঘির পাড়, আখালিয়া বড়বাড়ি, আম্বরখানা এলাকায় টানাবৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। এসব এলাকার অনেক স্থানে রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে পানির নিচে। ড্রেনে ময়লা জমে থাকা, কোনো কোনো এলাকায় পানি নিস্কাশনের খাল দখলের কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই সড়ক ডুবছে। অনেকের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে যায়।
স্থানীয়রা জানান, রাতে টানা বৃষ্টির ফলে বাসাবাড়ি ও সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। দিবাগত রাত তিনটার দিকে বৃষ্টি কমে গেলে পানি নামতে শুরু করে।
জালালপুরের আলী আছকর বলেন, বঙ্গবীর রোডের দু’পাশেই ড্রেনে কাজ চলছে। কিছুকিছু জায়গায় কাজ শেষ হলেও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা সঠিক ভাবে না থাকায় অল্প বৃষ্টিতে সড়কে পানি উঠে যায়।সিসিকের উন্নয়ন কাজ থেমে থাকায় এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
উপশহরের বাসিন্দা মিতা আক্তার বলেন, গত কয়েকদিন থেকে টানা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে বুধবার ও গত রাতের বৃষ্টিতে ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশ করে। কোন রকম রাত কাটালেও সকাল থেকে বৃষ্টি থাকায় ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে রাখা হয়েছে। উপশহরে অল্প বৃষ্টিতে এমন সমস্যা প্রায় দেখা দেয়।
লালাদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা আসমা আক্তার বলেন, গতকাল রাত দুইটার দিকে হঠাৎ ঘরের সামনে পানি জমতে শুরু করে। আড়াইটার দিকে ঘরের সামনের পানি কিছুটা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। সেগুলো বালতিতে ফেলতে হয়েছে। তবে সকালে পানি কমে গেছে বলে জানান তিনি।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা জানান, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি এখনো বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি, তবে নদীর পানি বাড়ছে।
সিলেট আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃষ্টির হার কমে আসবে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরও ২১ মে পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
আরও জানিয়েছে, গতকাল সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সিলেটে ৬১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় কোনো বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়নি।
সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানান, ২১ মে পর্যন্ত আবহাওয়ার বার্তায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসবে। আজ রাতেও বৃষ্টি হবে এবং সেটি আগেভাগেই শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।

এমএনআই