ঈদের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল

প্রকাশিত: ২:২১ অপরাহ্ণ, মে ৪, ২০২২

ঈদের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল

নিজস্ব প্রতিবেদক: পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে সিলেটে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। প্রকৃতির টানে ছুটে আসা এই মানুষগুলোর বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে সৃষ্টি হয়েছে অন্যরকম আবহের। প্রাণ ফিরেছে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলোতে। ঈদের ছুটিতে দ্বিতীয় দিনে মুখরিত হয়ে উঠেছে সিলেটের পর্যটন স্পট সমূহ। ঈদের দিন বিকালে সিলেট নগরী ও শহরতলীর প্রতিটি পর্যটন স্পটে পর্যটকদের ভিড় ছিল দেখার মতো।
এদিকে, বুধবার ঈদের দ্বিতীয় দিনে জাফলং, লালাখাল, রাতারগুল, বিছনাকান্দি, পান্তুমাই, ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর, দরগাহে হযরত শাহজালাল (র.) মাজারের পাশাপাশি সিলেট নগরীর বিভিন্ন পার্কগুলোতে দল বেঁধে গাড়ি নিয়ে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। সিলেটের সবকটি হোটেল-মোটেলও বুকড।
ভারতের মেঘালয় পাহাড় ঘেঁষা প্রকৃতির অপরূপ লীলাভূমি প্রকৃতি কন্যা জাফলং, পান্তুমাই’র ঝর্ণা, বিছনাকান্দির স্বচ্ছ-সফেদ পানি আর সোয়াম্প ফরেস্ট খ্যাত রাতারগুল, ভোলাগঞ্জের জিরো লাইনে সাদা পাথরের অপরুপ দৃশ্য এক নজর দেখতে কার না মন চায়!
গত দুই বছরে করোনা ভাইরাসের কারণে সরকারি বিধি-নিষেধ থাকায় ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও দেশের অন্যস্থান থেকে সিলেট আসতে পারেননি ভ্রমণ পিপাসুরা। কিন্তু এবার কোনো ধরণের বিধি নিষেধ না থাকায় বাঁধ ভাঙ্গা উচ্ছ্বাসে
প্রকৃতির টানে দেশের অনেক জেলা থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের পাশাপাশি উঠতি বয়সী যুবক-যুবতীরা ছুটে এসেছেন সিলেটে ঈদের ছুটি কাটাতে।
ছুটি কাটাতে সিলেটের একটি আবাসিক হোটেলে অগ্রিম বুকিং করেছেন বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা এ কে আজাদ। তিনি বলেন, ‘এবার ঈদের ছুটি কিছুটা লম্বা। এই সুযোগে পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে সিলেটে ঘুরে বেড়ানোর পরিকল্পনা করে রেখেছি। সবকিছু ঠিক থাকলে ৪ মে সিলেটে পৌঁছে হোটেলে উঠব।’
ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর শীতল পানিতে পরশ জুড়াতে এসেছেন শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দা সজীব। তিনি বলেন, ‘সিলেটের বিভিন্ন স্থান আগেও এসেছি, কিন্তু সাদা পাথরের পাথর দেখিনি। এই পর্যটন স্পট দেখতে ঈদের ছুটিকে কাজে লাগাচ্ছি। স্পটটি দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগছে।’ তিনি আরও বলেন, সিলেট থেকে স্পটে আসা যায় খুব সহজে।কিন্তু নৌকা ভাড়ার জন্য ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে।
এদিকে, সিলেট অঞ্চলের ট্যুরিস্ট পুলিশ সুপার মো. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘ঈদ–পরবর্তী সময়ে চার দিন সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় স্থানীয় পর্যটকসহ গড়ে আট লাখ পর্যটক উপস্থিত থাকবেন বলে ধারণা করছি। এ জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’ তিনি নিজে পর্যটনকেন্দ্রগুলো পর্যবেক্ষণ করেছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পর্যটনকেন্দ্রগুলো ঘুরে সেখানকার দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে পর্যটকদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পর্যটকদের সতর্কতার জন্য পর্যটনকেন্দ্রগুলোয় নির্দেশনামূলক ফেস্টুন লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া নিরাপত্তার জন্য পর্যটকদের পানিতে নামার ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হবে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট জেলা পুলিশ এরই মধ্যে সিলেটের ১০টি পর্যটনকেন্দ্র ও জনসমাগমস্থল চিহ্নিত করেছে। এসব কেন্দ্রে ট্যুরিস্ট পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করা হবে। এ ছাড়া সাদাপোশাকেও গোয়েন্দা পুলিশ নিযুক্ত থাকবে।

এমএনআই