ফেইসবুকে মেয়ে সেজে সিলেটে এনে যুবককে হত্যা, গ্রেফতার অপর যুবক

প্রকাশিত: ১০:১৭ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৫, ২০২২

ফেইসবুকে মেয়ে সেজে সিলেটে এনে যুবককে হত্যা, গ্রেফতার অপর যুবক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেইসবুকে মেয়ে সেজে এক যুবককে সিলেটে এনে হত্যা করে তার লাশ জাফলং সীমান্ত এলাকায় রেখে পালাতে চেয়েছিলো অপর আরেক যুবক। শেষ পর্যন্ত শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের খাঁচায় ধরা পড়তে হয়েছে তাকে।
সিলেট জেলা পুলিশ পুলিশ জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জাফলং সীমান্ত এলাকায় হাত পা বাঁধা অবস্থায় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ। পরে বিষয়ে তদন্তে লাশের পরিচয় শনাক্ত করা হয়। এছাড়াও এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেফতার করে তারা।
নিহত ব্যক্তি কাওছার আহমদ রাজু(৩২)। তিনি ব্রাম্মণবাড়িয়ার নবীনগরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার উপজেলার কালাম বহরপুর গ্রামের আবদুল বাছিতের ছেলে।
এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি চাপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ এলাকার শামসুল ইসলাম হাসান (৩২)।
সিলেট জেলা পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন পিপিএম শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ এপ্রিল) দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে জাফলং সংগ্রামপুঞ্জি বিজিবি ক্যাম্পের প্রায় পাঁচশত গজ পূর্বে একটি টিলা সংলগ্ন জমি থেকে এক ব্যক্তির লাশের সংবাদ পেলে তখন গোয়াইনঘাট থানার গোয়াইনঘাট সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কে এম নজরুল ইসলামসহ একটি টিমকে সেখানে পাঠিয়ে লাশটি উদ্ধার করি। অজ্ঞাতনামা ওই লাশের পোষাক ও মুখে দাঁড়ি দেখে তাকে একজন হুজুরের মতোই মনে হয়েছে। এসময় লাশের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় ছিলো।
ঘটনা অনুসন্ধানে জানা যায়, তিনি মেঘালয়ে একটি হোটেলে এসেছিলেন। সেখান থেকে ভিকটিমের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ। সেখানে গিয়ে হোটেলের ১০৬ নম্বর রুমে শামসুল ইসলাম হাসান নামের এক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়।
তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তিনি আইন শৃংখলা বাহিনি পরিচয়ে এপ্রিলের ৯ তারিখের ওই হোটেলে ওঠেন। হোটেল কর্তৃপক্ষকে পাত্তা না দিয়ে জোরপূর্বক সেখানে অবস্থান করলেন শামসুল ইসলাম হাসান।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তার রুম থেকে একটি পিস্তল (ডামি), ৪টি মোবাইল ও একটি হার্ডডিস্ক উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, ‘সামিয়া জাহান’ নামের একটি ফেইক আইডি থেকে ভিকটিমের সাথে শামসুল ইসলাম হাসানের পরিচয় হয়। এবং ওইদিন ভিকটিম তার সাথে দেখা করতে এখানে আসে। এখানে এসে রাজু জানতে পারে সে মেয়ে নয় একটি ছেলের সাথে এতোদিন যোগাযোগ রেখেছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শামসুল ইসলাম রাজু জোর করে সেখান থেকে নিয়ে হাত পা বেঁধে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে।
পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। ময়না তদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে। এছাড়া, গ্রেফতারকৃত আসামীকে আদালতে পাঠানো হবে।

এমএনআই