সিলেটের বাজারে দাম কমেছে সবজির, বেড়েছে চালের দাম

প্রকাশিত: ১:০৯ অপরাহ্ণ, জুন ২৫, ২০২১

সিলেটের বাজারে দাম কমেছে সবজির, বেড়েছে চালের দাম

নগর বার্তা ডেস্কঃসিলেটে সবজির দাম কমলেও গেলো পনের দিনের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি অন্তত এক শত টাকা থেকে জাতভেদে পাঁচ শত টাকা পর্যন্ত। অপরদিকে পেঁয়াজ আলু ও রসুনের দাম স্থিতিশীল আছে বলে জানা গেছে। তবে পাইকারি বাজারে সবজি কিংবা নিত্যপণ্যের দাম যেমনই হোক খুচরা বাজারে এসে তা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। আবার এক বাজার থেকে অন্য বাজার ঘুরলেই চলছে যার যেমন খুশি দাম আদায়।কালীঘাটের মতিউর রহমান এন্ড ব্রাদার্সের সত্ত্বাধিকারী মতিউর রহমানের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গেলো পনের দিনের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে কয়েক দফায়। সর্বনিম্ন একশত টাকা থেকে মান এবং জাত ভেদে সর্বোচ্চ ৫ শত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে পঞ্চাশ কেজি চালের বস্তার দাম।বৃহস্পতিবার সরেজমিনে সিলেটের চাউলের আড়ৎ ঘুরে দেখা গেছে উনত্রিশ নতুন চাল ১৮০০ টাকা থেকে বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০০, হিরা নতুন ১৬০০ থেকে বেড়ে ১৭ শত টাকা, স্থানীয় আটাশ ১৯ শত থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা, আশুগঞ্জি মালা একশত টাকা বেড়ে ২৪০০, আশুগঞ্জি উনত্রিশ দাম বেড়ে ২০০০, জিরা সেদ্ধ ২৪০০ টাকা থেকে এক লাফে ২৯০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। আবার অটো মিলের জিরা সেদ্ধ ২৪০০ টাকা থেকে সাড়ে চারশত টাকা বেড়ে ২৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে আটাশ সেদ্ধ সামান্য বেড়ে ২১৫০, নাজিরশাই পুরাতন ১৫ দিনের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় ৫শত টাকা। আর চিনিগুড়া প্রায় স্থিতিশীল থেকে বিক্রি হচ্ছে ৪০০০-৪৪০০ পর্যন্ত।অপরদিকে পেঁয়াজ রসুন ও আলুর আড়ত ব্যবসায়ী নিলাঞ্জন দাস জানিয়েছেন এসব পণ্যের দাম প্রায় স্থিতিশীল। তিনি জানান মুন্সিগঞ্জি আলু পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি ১৬ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে আর রাজশাহীর আলু পাইকারি দাম ১৮ টাকা কেজি। যা আগের মুই স্থিতিশীল। ঠিক তেমনই পেঁয়াজের দাম সর্বনিম্ন ২০ টাকা থেকে মানভেদে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অপরদিকে দেশি রসুনের কেজি ৪০-৪৫ এবং চায়না রসুন ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।তবে দাম কমেছে সবজি। সকল সবজিতেই কিছুনা কিছু দাম কমেছে বলে পাইকারি বাজার ঘুরে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সিলেটের একমাত্র সবজির আড়ৎ সোবহানীঘাটে গিয়ে দেখা গেছে কাকরুল ২০ টাকা করে ধরে পাঁচ কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা গেলো সপ্তাহে কেজিপ্রতি ৩০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে। পটল ২২ টাকা, কচুমুখি ৪০, কাঁচামরিচ ৩০, চিচিঙ্গা ২২, বেগুন ২০, বরবটি ৪০, মুলা ২০, পাতা কপি ২০ এবং পেঁপে ২২, গাজর ৩০ টাকা থেকে নেমে ২৪ টাকা কলেস্টরল টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা দামে।এসময় সবজির আড়ৎ দোকান মাহা বাণিজ্যালয়ের ব্যবসায়ী ফারুক আহমদ জানান, গেলো এক সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা কমেছে। সর্বনিম্ন ৩ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত কমেছে সবজির দাম।তবে পাইকারি বাজারে যেমনই হোক লাগামহীন ভাবেই দাম আদায় চলছে খুচরা বাজারে। কখনো কখনো এক বাজার থেকে আরেক বাজারের দামের দ্বিগুণ পার্থক্যও দেখা গেছে। এমনকি সবজি পাইকারি বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ২৫ টাকার ভিতর থাকলেও খুচরা বাজারে ৩৫ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বললেই চলে। সে হিসেবে কেজিপ্রতি অন্তত ১০ টাকা করে মুনাফা আদায় করছেন খুচরা বিক্রেতারা। আর পেঁয়াজ সর্বনিম্ন ৩৬ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৪৪ টাকা পর্যন্ত বিক্রিহচ্ছে খুচরা বাজারে। একই অবস্থা চালেও। যে চাল পাইকারি বাজারে ১৯শত টাকা বিক্রি হচ্ছে একই চাল খুচরা বাজারে দাম বাড়ার অজুহাতে অন্তত ২১ শত থেকে ২২ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে।তবে দামের এমন তারতম্যের বিষয়ে প্রশাসনের উদাসীনতা আছে বলে অভিযোগ করলেন এক ক্রেতা। বৃহস্পতিবার বিকালে রিকাবীবাজার থেকে ৪৫ টাকা দিয়ে দেশি পেঁয়াজ কিনেছেন নাইম ইমরান নামের এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা। এতো বেশি টাকা দিয়ে পেঁয়াজ কেনার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় সকল দোকানেই দাম সমান। পাইকারি বাজারে কত বিক্রি হচ্ছে আমরাতো জানি না। এখন দোকানদাররা এর নিচে বিক্রি করবে না। আর আমিতো এক কেজি পেঁয়াজের জন্য কালীঘাটে যেতে পারি না। তাই কিনতে বাধ্য। তবে প্রশাসন উদাসীন না হলে খুচরা ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে এ ভাবে জিম্মি করতে পারত না।আবার খুচরা বাজারেও এক বাজার থেকে অপর বাজারের সাথে দামের বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা গেছে। সিলেটের সবচেয়ে জনপ্রিয় বন্দরস্থ ব্রহ্মময়ী বাজারের সাথেই অন্যান্য বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশ পাতাল পার্থক্য।তবে পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা পণ্যের দামের স্থিতিশীলতা কিংবা দাম কমার কথা জানালেও তাঁর ঠিক বিপরিত বলছেন খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা। বেশি মুনাফার লোভে তারা পণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যের কথাই বলছেন।পাইকারি বাজারের সাথে খুচরা বাজারে পণ্যের দামের এমন আকাশ পাতাল পার্থক্যের বিষয় জানিয়ে বাজার তদারকির ব্যাপারে জানতে চাইলে সিলেট জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (সাধারণ শাখা, মিডিয়া সেল) শাম্মা লাবিবা অর্ণব বলেন, আমাদের একজন বাজার তদারক কর্মকর্তা আছেন। উনার মাধ্যমে নিয়মিত বাজার তদারকি হয়। তাছাড়া এখনো এমন কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। তবুও যেহেতু এখন জানলাম সে ক্ষেত্রে আগামী উনার সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।