বাংলাদেশ নিজের শক্তিতে দাঁড়িয়েছে

প্রকাশিত: ৭:০২ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ২৯, ২০২৩

বাংলাদেশ নিজের শক্তিতে দাঁড়িয়েছে

ডেস্ক নিউজঃ চলমান বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি জোর কদমেই এগিয়ে চলেছে। অন্য অনেক দেশের মতোই কভিড-১৯-এর কারণে বেশ খানিকটা থমকে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি। প্রায় দেড় দশক ধরে গড়ে সাড়ে ৬ শতাংশেরও বেশি হারে বেড়ে চলা এই অর্থনীতি ২০২০-২১ সালে কমে ৪ শতাংশের মতো হারে বেড়েছিল। এরপর স্বচেষ্টায় ঘুরে দাঁড়াচ্ছিল এই অর্থনীতি। কিন্তু ২০২২ সলের শুরুর দিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ফের আমাদের অর্থনীতিকে চাপের মধ্যে ফেলে দেয়। বিশেষ করে দীর্ঘদিন ধরে যে ম্যাক্রো অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছিল বাংলাদেশ, তা বড় ধরনের বাধার মুখে পড়ে। রিজার্ভ কমতে থাকে। টাকার দামও কমে। মূল্যস্ফীতি বাড়ে। অনানুষ্ঠানিক খাতের কোটি পরিবারের গরিব ও কম আয়ের মানুষের জন্য বিনা অথবা কম মূল্যে খাবার সরবরাহের মতো বিরাট সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিতে হয় সরকারকে।

শক্তিশালী কৃষি খাত, রপ্তানি এবং প্রবাস আয় বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সচল রাখতে বড় ভূমিকা রেখে চলেছে। সে কারণেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জনকে প্রশংসার চোখে দেখে সারা বিশ্ব। এর প্রকাশ ঘটে কয়েক দিন আগে বাংলাদেশ সফরে আসা বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ফন ট্রোটসেনবার্গের কথায়। বিশেষ করে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভূমিকায় যে অস্বস্তি বাংলাদেশের ছিল, তা যেন অনেকটাই কেটে গেছে। নিজের অর্থে ওই সেতু নির্মাণ করে বিশ্বের কাছে যে আত্মশক্তিতে বলীয়ান অগ্রযাত্রার নজির বাংলাদেশ রেখেছে, তার প্রভাব মনে হয় বিশ্বব্যাংকের ওপর মহলেও পড়েছে। তাই আমি অবাক হইনি যখন তিনি বলেন, ‘সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, আর্থিক খাত, জ্বালানি এবং জলবায়ু সহনশীলতার খাতে জোরালো সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদি প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারে।’ অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়নে বাংলাদেশের সফলতার ট্র্যাক রেকর্ডই যে এমন আশাবাদের উৎস, সেটিও তাঁর আনুষ্ঠানিক বক্তব্যে উঠে এসেছে। তিনি এ দেশকে ‘৫০ বছরে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ উন্নয়ন গল্পের একটি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

বিশ্বব্যাংক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের এই আশাবাদ এমনি এমনি তৈরি হয়নি। এর ভিত্তি বাংলাদেশের উদ্যোক্তা জনগণ এবং সাহসী নেতৃত্বই তলে তলে তৈরি করেছেন। উল্লেখ্য, এক যুগেরও বেশি আগে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার যে অভিযাত্রা শুরু হয়েছিল, তার পরিণতিতে একদিকে যেমন অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই প্রবৃদ্ধি এসেছে, অন্যদিকে আমাদের আর্থ-সামাজিক ভিত্তিটিও অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় শক্তিশালী হয়েছে। সেই নিজস্ব শক্তির কল্যাণেই বাংলাদেশ করোনাজনিত সংকট সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ের ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত অর্থনৈতিক চাপ সামলানোর ক্ষেত্রেও অন্য বেশির ভাগ দেশের চেয়ে বেশি সুসংহত অবস্থায় রয়েছে। গেল ডিসেম্বরে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ উপলক্ষে বক্তৃতায় তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী দুই দশকের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার নতুন অভিযাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন। জানিয়েছেন, তাঁর সরকার ‘স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি’—এই চারটি ভিত্তি মজবুতকরণের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের জন্য এরই মধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে। এই পরিকল্পনা ও প্রত্যয় আশাব্যঞ্জক তো বটেই, একই সঙ্গে আমাদের নিজস্ব সামাজিক পুঁজি ও সম্ভাবনাময় আর্থ-সামাজিক ভিত্তির সম্মিলনে যে আত্মশক্তি পুরো সমাজে সঞ্চারিত হয়েছে, তার প্রতিফলনও এখানে ঘটেছে।

এই আত্মবিশ্বাস অবশ্যই ভিত্তিহীন নয়। স্বাধীনতার পর থেকে এযাবৎ সময়ে মৌলিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকগুলোর পরিবর্তনের দিকে একটু নজর দিলেই এই আত্মবিশ্বাসের উৎসর সন্ধান মেলে। স্বাধীনতার পরে একেবারে শূন্য থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২-এ মাথাপিছু আয় ছিল ৯১ ডলারের কম (কারেন্ট ইউএস ডলারে)। বিশ্বব্যাংকের তথ্য থেকে দেখা যায়, চার বছরেরও কম সময়ে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী নেতৃত্বের কল্যাণে ১৯৭৫-এ সেই মাথাপিছু আয় ২৬০ ডলার ছাড়িয়ে যায় (অর্থাৎ প্রায় তিন গুণ বেড়ে যায়)। বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে উল্টোপথে যাত্রা শুরু করেছিল অর্থনীতি। মাথাপিছু আয় বাড়ার বদলে কমতে শুরু করে। ১৯৭৫-এর পর্যায়ে উঠে আসতে অপেক্ষা করতে হয়েছিল আরো ১৩-১৪ বছর। তার পরও আগের সেই গতি ফিরে পেতে সময় লেগেছে আরো বেশি। মাঝখানে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত কিছুটা উল্লম্ফন ঘটানো সম্ভব হয়েছিল আবারও বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কল্যাণমুখী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর। কিন্তু আবারও এই অভিযাত্রায় ছেদ পড়ে। তবে ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা দ্বিতীয়বারের মতো দেশের দায়িত্বভার কাঁধে নেওয়ার পর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ওই সময় মাথাপিছু আয় ছিল ৬৩০ ডলার। ১৩ বছরের মধ্যে (২০২১ সালে) তা বেড়ে হয় দুই হাজার ৪৫৭ ডলার। সর্বশেষ ২০২২-এর হিসাব বলছে, এই আয় এখন দুই হাজার ৮০০ ডলার ছাড়িয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে এই হিসাবে মাথাপিছু আয় যতটুকু বেড়েছে তার ৮০ শতাংশের বেশিই বেড়েছে গত ১৩-১৪ বছরে। অর্থাৎ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নের সাম্প্রতিক সময়ের অভিযাত্রার ফলে আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিতে নাটকীয় গতি সঞ্চারিত হয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রেও। স্বাধীনতা-উত্তরকালে বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ (কারেন্ট প্রাইস হিসাবে) ১২০ গুণেরও বেশি বেড়ে ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, আর এই প্রবৃদ্ধির ৬১ শতাংশ হয়েছে গত ১৩-১৪ বছরে। একইভাবে আমদানি যে ৮৩ গুণ বেড়েছে তার ৬৯ শতাংশই ঘটেছে ২০০৮-০৯ পরবর্তী সময়ে। রেমিট্যান্স প্রবাহেও এই সর্বশেষ ১৩-১৪ বছরে সবচেয়ে বড় উল্লম্ফন আমরা দেখেছি (পাঁচ দশকের মোট প্রবৃদ্ধির ৬০ শতাংশ এই সময়ে ঘটেছে)। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সাম্প্রতিক সময়ের বৈশ্বিক সংকটের কারণে কিছুটা ক্ষয়িত হয়েছে। তবে মনে রাখতে হবে বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, এই রিজার্ভের পরিমাণ ২০০৮-০৯ ছিল ছয় বিলিয়নেরও কম, আর পরের ১২-১৩ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৪৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।

বাংলাদেশের এই সামষ্টিক অর্থনৈতিক সাফল্যে কৃষির রয়েছে অসামান্য অবদান। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে আমাদের ব্যাপক সাফল্য রয়েছে (দম্পতিপ্রতি জন্মহার মাত্রা ২.১)। তবু জনসংখ্যা তো বেড়েছে। তাই মাথাপিছু চাষের জমি ১৯৭৩-এ ২৮ শতাংশ থেকে ২০১৮-তে ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু শস্যসহ সব খাদ্যপণ্যের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে দূরদর্শী কৃষিনীতির মাধ্যমে, সরকারি ও অসরকারি কৃষি উদ্যোগগুলোর যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে। এ সময়ের ব্যবধানে মাথাপিছু বার্ষিক চাল উৎপাদন ১৪০ কেজি থেকে বেড়ে ২৪০ কেজি, মাছের উৎপাদন ১১ কেজি থেকে বেড়ে ২৫ কেজি, মাংসের উৎপাদন তিন কেজি থেকে বেড়ে ৪৪ কেজি, ডিমের উৎপাদন ১৫টি থেকে বেড়ে ১০১টি এবং দুধ ছয় কেজি থেকে বেড়ে ৫৮ কেজি হয়েছে। এর ফলে খাদ্য উৎপাদন সূচকে আমরা চীন, ভারত ও ভিয়েতনামের মতো বড় কৃষি খাতের দেশকে অতিক্রম করে গেছি।

কৃষি, রপ্তানি আয় এবং রেমিট্যান্সের এমন সাফল্যের জন্য যথাযথ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রেখেছে সরকারের সহায়তায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাপকভিত্তিক আর্থিক অন্তর্ভুক্তির অভিযান। আগে আনুষ্ঠানিক আর্থিকসেবার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে আর্থিকসেবার আওতায় নিয়ে আসা এবং ‘রিয়াল ইকোনমি’তে ঋণ সরবরাহ বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে পরিচালিত এই অভিযানের মূল চালিকাশক্তি ছিল ডিজিটাল প্রযুক্তির সময়োচিত ব্যবহার। এর ফলে ২০০৮-০৯-এর বৈশ্বিক আর্থিক সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ যেমন সফল হয়েছে, তেমনি শত সংকটের মুখেও দেশের প্রবৃদ্ধির চাকা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গতিশীল করা গেছে। বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোতে সরকারের সময়োচিত মনোযোগও সামষ্টিক অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। পদ্মা সেতু, কালনা সেতু, ঢাকায় মেট্রো রেল, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে, মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের মতো বৃহৎ প্রকল্পগুলো দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় ৩৪ শতাংশের জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখবে। আর জিডিপিতে ১.২ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি যুক্ত করবে আগামী বছরগুলোতে। ফলে একসময় যে দেশের সামনে ছিল অনেক হতাশা আর অনিশ্চয়তা, আজ সেই দেশ সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দিচ্ছে কিভাবে সামনে এগোতে হয়। ভিজ্যুয়াল ক্যাপিটালিস্টের ‘দ্য টপ হেভি গ্লোবাল ইকোনমি’ প্রতিবেদনে তাই বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৫তম শীর্ষ অর্থনীতির মর্যাদা পেয়েছে।

সার্বিক বিচারে তা-ই বলা যায়, ডিজিটাল বাংলাদেশ অভিযানের মাধ্যমে একদিকে যেমন সামষ্টিক অর্থনীতির একটি নাটকীয় অন্তর্ভুক্তিমূলক উল্লম্ফন ঘটানো গেছে, অন্যদিকে তেমনি পরের দুটি দশকের জন্য আরো বড় সম্ভাবনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা সম্ভব হয়েছে। তাই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন অভিযাত্রার দ্বিতীয় পর্ব অর্থাৎ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের অভিযান নিয়ে আশাবাদী হতেই হয়। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থাগুলো এবং অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরাও এই আশাবাদের অর্কেস্ট্রায় তাল মেলাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো যে পথে দুই হাজার ৪০০ ডলার মাথাপিছু আয় থেকে অল্প সময়ের মধ্যে চার হাজার ডলার মাথাপিছু আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে, বাংলাদেশের সামনেও তেমন সম্ভাবনা রয়েছে। ২০২৬-এর মধ্যেই আমাদের মাথাপিছু আয় চার হাজার ডলারের মাইলফলক স্পর্শ করবে। ওই সময়ের মধ্যে আরো ১১ শতাংশ নাগরিক নিম্ন আয় শ্রেণি থেকে উঠে আসবে।

তবে সামনের পথটি একেবারেই মসৃণ নয়। কভিড-উত্তর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি ইউরোপে যুদ্ধের কারণে জ্বালানি-সারের মূল্যবৃদ্ধি, সরবরাহ চেইনে বাধা, আন্তর্জাতিক মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা ইত্যাদি কারণে আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনাও চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, রপ্তানি ও রেমিট্যান্স থেকে যে আয় আমরা পেয়েছি তা আমদানি ব্যয়ের ৮২ শতাংশ (অর্থাৎ ১৮ শতাংশের ব্যবধান রয়ে গেছে)। তবে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির চাকা সচল রাখার যে ঐতিহ্য আমরা গড়ে তুলতে পেরেছি গত ১৩-১৪ বছরে, তার বরাতে এবারের এই চ্যালেঞ্জগুলোও সফলভাবে মোকাবেলা করা যাবে বলে মনে হচ্ছে।

সবচেয়ে বড় ভরসার কথা এই যে আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব একদিকে এযাবৎকালের অর্জনের কারণে যেমন আশাবাদী, অন্যদিকে তেমনি আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়েও যথার্থ সংবেদনশীলতা দেখিয়ে চলেছেন। বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সংকটের প্রভাব কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের সহায়তার প্রতি জোর দিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। বহিঃস্থ যে বিষয়গুলোর ওপর আমাদের নীতিনির্ধারকদের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ নেই, সেগুলোর প্রতি এহেন সংবেদনশীলতাই আমাদের বড় পুঁজি।

এই সামাজিক পুঁজি আর বলিষ্ঠ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সব অংশীজনের সর্বাত্মক সহযোগিতা নিশ্চিত করা এবং একই সঙ্গে সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অব্যাহত রাখাই এখন মূল কাজ।

লেখক : বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের দশম গভর্নর