সিলেটে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে মিলছে না ঠাঁই

প্রকাশিত: ১২:৫৪ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২২

সিলেটে বন্যা আশ্রয়কেন্দ্রে মিলছে না ঠাঁই

এম বাংলা নিউজঃএক মাসের মাথায় ফের বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট মহানগরী। গত কয়েক দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বন্যাকবলিত হয়েছেন সিলেট মহানগরীর প্রায় ৫০টি এলাকার বাসিন্দা। বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনদের জন্য ৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও উঠার অপেক্ষায় রয়েছেন আরও অনেকে।বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত বৃষ্টি ও সুরমা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তীরবর্তী এলাকার লোকজনদের দূর্ভোগ বেড়েছে। নতুন করে আরও কয়েকটি এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে বাসা-বাড়িতে ঢুকে পড়েছে পানি। এতে  ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর লাখো পানিবন্দী মানুষ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত এগারোটায় সিলেট নগরীর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে আশ্রয় নিতে আসা অনেক লোকজন জড়ো রয়েছেন। তবে এসএসসি পরীক্ষার জন্য কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারিত থাকায় স্কুলটি আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে স্কুলের সামনের বারান্দায়, ভ্যানগাড়িতে অবস্থান করছেন মানুষ।
জানা গেছে, সিলেট নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকায় সেখানে সিসিক কিংবা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন আশ্রয়কেন্দ্র খোলা সম্ভব হয়নি। যে কারণে বন্যা কবলিত ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের লোকজন আশ্রয়কেন্দ্র অথবা নিরাপদ জায়গার জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন।সিলেট নগরীর বন্যাকবলিত এলাকার লোকজনদের দ্রুত আরও আশ্রয়কেন্দ্র খোলার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) বিকাল ৩টায় সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে ‘জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি’র উদ্যোগে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান। বৈঠকে উপস্থিত সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী জানান, সিলেট নগরীতে প্রাথমিক পর্যায়ে ৩১ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আরও আশ্রয়কেন্দ্র বৃদ্ধি করা হবে।
সিলেট নগরীর উপশহর, তেররতন, সাদারপাড়া, কুশিঘাট, মাছিমপুর, ছড়ারপাড়, তালতলা, জামতলা, ঘাসিটুলাসহ সুরমা তীরবর্তী নগরীর বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বন্যা আক্রান্ত এলাকার হাজার হাজার মানুষ।সিলেট নগরীর পাশাপাশি সদর উপজেলার জালালাবাদ, কান্দিগাঁও, টুকেরবাজার ও খাদিমনগর ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশনের বর্ধিত এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে এসব এলাকার খামারের মাছ। নষ্ট হয়েছে মাঠের ফসল। সুরমা তীরবর্তী দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকাও বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে।সিলেট নগরীর পাশাপাশি পানিতে তলিয়ে গেছে জেলার সদর, কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইঘাট, জৈন্তা, কানাইঘাট, বিশ্বনাথ উপজেলার বিস্তৃর্ণ জনপদ। লাখ লাখ মানুষ হয়ে পড়েছেন পানিবন্দি। আশ্রয়কেন্দ্র কিংবা নিরাপদ স্থানে যেতে এসব এলাকার বাসিন্দারা আর্তনাদ জানাচ্ছেন। এছাড়াও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য চলছে হাহাকার। অব্যাহত বৃষ্টিপাত ও নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড।