একের পর এক বিতর্কে সিসিক মেয়র আরিফ

প্রকাশিত: ৫:২৬ অপরাহ্ণ, মে ১৫, ২০২২

একের পর এক বিতর্কে সিসিক মেয়র আরিফ

এমবাংলা নিউজ: ২০১৮ সালের আগস্টে সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক। সে রাতে পূর্ব বিরোধের জেরে মেয়রের বাসার সামনেই খুন হন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু। এ ঘটনায় রকিবকে প্রধান আসামি করে মামলা করে পরিবার। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রদল নেতা রকিব পালিয়ে লন্ডন চলে যান।
বিতর্ক পিছুই ছাড়ছে না সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর। সম্প্রতি সিলেটে এক ভ্যানচালককে বেত্রাঘাত করে সমালোচিত হন তিনি।
এই রেশ না কাটতেই এবার লন্ডনে হত্যা মামলার এক আসামির সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠভাবে’ দেখা গেছে মেয়র আরিফকে।
আরিফুল হক ব্যক্তিগত সফরে গত ৮ মে লন্ডন যান। সেখানে তার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করছেন তার অনুসারীরা। এরকম কিছু ছবিতে মেয়র আরিফকে ছাত্রদল নেতা ফয়জুল হক রাজু হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি আব্দুর রকিব চৌধুরীর সঙ্গে দেখা গেছে।
রকিব সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। আর মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহপ্রচার সম্পাদক ছিলেন রাজু।
২০১৮ সালের আগস্টে সিলেট সিটি নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক। সে রাতে পূর্ব বিরোধের জেরে মেয়রের বাসার সামনেই খুন হন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহ প্রচার সম্পাদক ফয়জুল হক রাজু। এ ঘটনায় রকিবকে প্রধান আসামি করে মামলা করে পরিবার। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে ছাত্রদল নেতা রকিব পালিয়ে লন্ডন চলে যান।
লন্ডনে গিয়ে হত্যা মামলার আসামির সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মেয়র আরিফের হোয়াটস অ্যাপ নাম্বারে একাধিকবার কল ও ম্যাসেজ দিলেও তিনি কোনো উত্তর দেননি।
তবে এমনকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, এটা খুবই গহৃত কাজ হয়েছে। সবারই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত। জনপ্রতিনিধিদের আরও বেশি থাকা উচিত।
তবে এরকম কিছু শোনেননি জানিয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, উনি ব্যক্তিগত সফরে লন্ডনে গেছেন। ফলে সেখানে তিনি কী করছেন তা আমাদের জানার কথা নয়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যায়, রকিবসহ কয়েকজন লন্ডনে মেয়র আরিফকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আরেকটি ছবিতে রকিবের সঙ্গে একই গাড়িতে দেখা গেছে মেয়র আরিফকে।
মেয়রের এই ছবিগুলো দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে রাজু হত্যা মামলার বাদী ও নিহতের চাচা দবির আলী বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন সময় প্রধান আসামি রকিবকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আসছি। অথচ মেয়র সেখানে গিয়ে তার সঙ্গে ছবি উঠছেন। যা খুবই দুঃখজনক।’

বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সিলেটের মেয়রের
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১২ মে রাজু হত্যা মামলায় ছাত্রদলের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা রকিব, দেলোয়ারসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মেয়র আরিফের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত রকিবের নির্দেশে রাজুকে খুন করা হয় বলে অভিযোগপত্রে পুলিশ উল্লেখ করে। এ মামলায় আসামিদের মধ্যে দেলোয়ারসহ ৩ জন কারাগারে আছেন। তবে বাকি ২৩ আসামি পলাতক আছেন।
রোববার মেয়র আরিফের দেশে ফেরার কথা রয়েছে বলে সিলেট সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল সড়কে ভ্যান দাঁড় করিয়ে রাখার অভিযোগে এক ভ্যান চালককে বেত দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠে মেয়র আরিফের বিরুদ্ধে। এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। যদিও মেয়রের দাবি, তিনি বেত্রাঘাত করেননি। ভয় দেখিয়েছেন কেবল।

এমএনআই